দলে ফিরেই গোলের দেখা পেলেন লিওনেল মেসি। ঝলক দেখালেন তার পিএসজি সতীর্থ আনহেল দি মারিয়াও।
আর তাতে ভর করে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে বড় জয় পেল আর্জেন্টিনা।
আজ শনিবার ঘরের মাঠ লা বোম্বোনেরায় দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। আলবিসেলেস্তেদের বাকি গোল করেছেন স্ট্রাইকার নিকোলাস গঞ্জালেস।
শুরু থেকেই দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও ফিনিশিংয়ের অভাবে গোল পাচ্ছিল না আর্জেন্টিনা। তবে প্রথমার্ধের বিরতির ঠিক ১০ মিনিট আগে দে পলের ক্রস থেকে গোল করে সেই আক্ষেপ ঘুচিয়ে দেন গঞ্জালেস। দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে স্বাগতিকরা। এরপর আনহেল দি মারিয়া ১২ মিনিটের ব্যবধানে নিজে গোল করার পাশাপাশি নিজের পিএসজি সতীর্থ মেসিকে দিয়ে এক গোল করিয়েও নেন।
আগেই বাছাইপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় এই ম্যাচ থেকে পাওয়ার কিছুই ছিল না ভেনেজুয়েলার। তবে আর্জেন্টিনাকে ‘আপসেট’ উপহার দিয়ে শীর্ষে উঠার পথ কঠিন করে তুলতে পারতো তারা। আর এরইমধ্যে কাতারের টিকিট কেটে ফেলা আর্জেন্টিনার সামনে ছিল শীর্ষে থাকা ব্রাজিলের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে আনার সুযোগ। সেই সুযোগ কাজে লাগাতেই কিনা গত ফেব্রুয়ারির কলম্বিয়া ম্যাচের দলটাতে ১০ পরিবর্তন আনেন স্কালোনি। ওই দলের একমাত্র ডিফেন্ডার পেজ্জেলা ছাড়া বাকি সবাইকে বাইরে রাখা হয়। আক্রমণভাগে মেসিকেও ফেরানো একই উদ্দেশ্যে।
দলের শক্তি বাড়িয়ে ফলও পেয়েছে আর্জেন্টিনা। শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন মেসি। ড্রিবলিং আর পাস দেওয়ার ধরন তরুণ মেসিকে মনে করিয়ে দেওয়ার মতোই। তবে ম্যাচের প্রথম গোলটা আসে গঞ্জালেসের পা থেকে। ৩৫তম মিনিটে রদ্রিগো দে পলের নিচু ক্রস প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারের দুই পায়ের ফাঁকা দিয়ে দূরের পোস্টে থাকা গঞ্জালেসকে খুঁজে নেয়। ছয় গজ বক্সে দৌড়ে এসে আলতো টোকায় বল জালে জড়িয়ে দেন গঞ্জালেস। যদিও গোল হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে বেশ কিছুক্ষণ ভিএআর দেখেন রেফারি। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আর্জেন্টিনার পক্ষেই যায়।
দ্বিতীয়ার্ধেও স্বাগতিকদের আক্রমণের ধার অব্যাহত থাকে। এর মধ্যে একা মেসিই দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিলেন। তবে কখনো সতীর্থের ভুলে, আবার কখনো নিজের ভুলে গোল পাচ্ছিলেন না তিনি। ৭০তম মিনিটে ম্যাক অ্যালিস্টারকে তুলে নিয়ে দি মারিয়াকে নামান আর্জেন্টিনা কোচ। ৯ মিনিট পরেই প্রতিদান দিয়ে দেন এই পিএসজি তারকা। দে পলের পাসে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এই উইঙ্গার। দে পলের জোড়া অ্যাসিস্টও পূর্ণ হয় তাতে।
গোল করার পর দি মারিয়া নিজেও অ্যাসিস্টের খাতায় নাম লেখান। ৮২তম মিনিটে দুই পিএসজি তারকার যুগলবন্দীতে আসে আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোল। প্রতিপক্ষের রক্ষণে ঢুকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল হালকা চিপে পেনাল্টি স্পটে পাঠিয়ে দেন দি মারিয়া। মেসি বেশ ভালো করেই সতীর্থদের উদ্দেশ্য বুঝে ফেলেন এবং বুক দিয়ে বল নামিয়ে অনসাইডে থেকে যান এবং প্রায় উন্মুক্ত পোস্টে দারুণ এক শটে বল জড়িয়ে দেন। আর তাতে সফরকারীদের কফিনে শেষ পেরেকটাও ঠুকে দেওয়া হয়ে যায়। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ১৫৯ ম্যাচে মেসির এটি ৮১তম গোল। আলবিসেলেস্তেদের জার্সিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলের মালিক গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার চেয়ে যা ২৭টি বেশি।
এই নিয়ে ১৬ ম্যাচে ১১ জয় ও ৫ ড্রয়ে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দুইয়েই রইলো আর্জেন্টিনা। আর এক ম্যাচ বেশি খেলা ভেনেজুয়েলা ৩ জয় ও ১ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে রইলো সবার নিচে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।